চকরিয়া নিউজ ডেস্ক ::
সৌদি আরবে শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। ২৯ আগস্ট রাত থেকে মিনায় মুসল্লিদের উপস্থিতি শুরুর মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। হজের অংশ হিসেবে মুসল্লিরা মিনা, আরাফাত ময়দান, মুজদালিফা, মক্কা ও মিনায় পাঁচদিন অবস্থান করবেন। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) ফজরসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পর তারা যাবেন মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত আরাফাতের ময়দানের দিকে। আরাফাতে যাওয়ার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে মুসল্লিরা পায়ে হেঁটে, হুইল চেয়ারে, বাসে- যে যেভাবে পারেন পৌঁছাবেন। সবার শরীর সাদা কাপড়ে ঢাকা থাকবে। তাদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের ময়দান।
সারা বিশ্বের ২০ লাখ মানুষ অংশ নিচ্ছেন হজে। বাংলাদেশ থেকে গিয়েছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ২২৯ জন। ইসলামের মূল ৫টি স্তম্ভের মধ্যে হজ হচ্ছে পঞ্চম স্তম্ভ। হিজরি বর্ষপঞ্জীর জ্বিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ হজ পালনের জন্য নির্ধারিত সময়। ইসলাম ধর্মমতে, শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ পালন করা ফরজ।
হজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য প্রসঙ্গে মুফতী আনসারুল হক ইমরান বলেন, ‘হজের তাৎপর্য ও গুরুত্ব অপরিসীম। কাবাঘরে সর্বপ্রথম হজ আদায় করেন আদম (আ.)। হজকে উত্তম ইবাদত বলা হয়। হজ পালনের প্রতিটি পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় আল্লাহ হুকুম ও পাপ থেকে দূরে থাকার বিষয়গুলো। যখন কোনও মুসলমান হজের জন্য এহরামের কাপড় গায়ে জড়িয়ে আত্মীয়-স্বজন ছেড়ে হজের জন্য গৃহত্যাগ করেন তখন মনে করিয়ে দেওয়া হয় আখেরাতের পথে রওয়ানা হওয়াকে। এহরামের কাপড় পরে পবিত্র হয়ে আল্লাহর ঘরে ‘লাব্বাইক’ বলে হাজির হওয়ার মনে করিয়ে দেয়, মৃত্যুর পরেও আল্লাহর দরবারে হাজির হতে হবে। স্মরণ করিয়ে দেয় এহরামের কাপড়ের মতো সাদা, পরিচ্ছন্ন অন্তর নিয়ে আল্লাহর সামনে হাজির হতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোরআন শরিফ ও হাদিস শরিফের হজের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে একটি সূরা আছে যার নাম “হজ”। সঠিক পদ্ধতিতে হজ পালন করেলে মানুষ শিশুদের মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। রাসূল (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ করলো এবং হজ সম্পাদনকালে কোনও প্রকার অশ্লীল কথা ও কাজ কিংবা গোনাহের কাজে লিপ্ত হয়নি, সে সদ্যোজাত নিষ্পাপ শিশুর মতো প্রত্যাবর্তন করল।”
ইহরাম অবস্থায় বেশ কিছু কাজ নিষিদ্ধ উল্লেখ করে মুফতী আনসারুল হক ইমরান বলেন, ‘নিষেধ করা হয়েছে ঝগড়া করা, কথা ও কাজে কাউকে কষ্ট দেওয়া। অর্থাৎ সহনশীল জীবন যাপনে অভ্যস্ত হতে শিক্ষা দেয় হজ। শিক্ষা দেয়, মুসলানদের ঝগড়াটে না হয়ে, ক্ষমা ও ধৈর্যশীল জীবনের। হজের সময় কোনও ধরনের শিকার করা যাবে না। ক্ষতিকর নয়, এমন কোনও প্রাণী মারা যাবে না। ফল হজ আমাদের শুধু মানুষ নয়, প্রাণীদের প্রতি দয়াশীল হতেও শিক্ষা দেয়।’
পাঠকের মতামত: